দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু বইয়ের ফ্ল্যাপের অংশঃ
বাঙালির মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের
স্বাধীনতার ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধু নামটি অবিচ্ছেদ্য। বাঙালির হাজার বছরের
ইতিহাস পরাধীন ও গ্লানিময়। ভিনদেশী শক্তির আধিপত্য মেনেই বাঙালির
সমাজ—সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে। অনুগত জীবনব্যবস্থার দিনলিপিই হয়ে উঠেছিল এ
অঞ্চলের মানুষের নিয়তি। শাসকশ্রেণির বিধিবিধান মেনে বাঙালি অভ্যস্ত হয়ে
পড়েছিল। তাদের ভাবনায় স্বাধীনতার বিষয়টি ছিল অনুপস্থিত। এমনকি ব্রিটিশ
আমলেও বাঙালি ছিল পিছিয়ে পড়া এক জনগোষ্ঠী। আর পূর্ববঙ্গ ছিল কৃষি
অধ্যুষিত গরিব কৃষকের আবাসস্থল। উন্নয়ন ও শিল্পায়ন ছিল তাদের জীবনে অধরা।
বাঙালির রাখাল রাজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বজাতিকে প্রথম
স্বাধীনতার দিকে আহ্বান জানালেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ একটি স্বাধীন
রাষ্ট্র। বাঙালি আজ একটি গর্বিত জাতি।
বঙ্গবন্ধু শোষণমুক্ত সমাজের কথা সব সময় চিন্তা করতেন। তবে স্বাধীনতার পর এ
দেশে সংকট আর অভাবের শেষ ছিল না। রাষ্ট্রীয় কোষাগার ছিল শূন্য। ভেঙে
পড়েছিল অর্থনীতি। এমন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য বঙ্গবন্ধুকে তীব্র
লড়াই করতে হয়েছে। তাঁকে মাড়াতে হলো কঠিন পথ। দেশের অভ্যন্তরীণ
খাদ্যাভাব, জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি,
কালোবাজারি, চোরাচালানি, বিশৃঙ্খলা ইত্যাদি কারণে দেশে নেমে এসেছিল তীব্র
অন্ধকার। সৃষ্টি হয়েছিল বিপৎসংকুল পরিস্থিতি। বঙ্গবন্ধু এসব পরিস্থিতি
মোকাবেলার জন্য গ্রহণ করেছিলেন নানা যুগোপযোগী পদক্ষেপ, যার লক্ষ্য ছিল
সোনার বাংলা গড়ে তোলা।
বস্তুত বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে চর্চার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সকল
প্রকার দুর্নীতি, ঘুষ, অন্যায় ও অশুভ কার্যকলাপ থেকে মুক্ত থেকে সত্যিকার
অর্থে ‘সোনার বাংলায়’ পরিণত হতে সক্ষম হবে। এই মানুষটি জীবনে এক যুগেরও
বেশি সময় (৪৬৮২ দিন) কারাগারেই কাটিয়েছেন, তবুও নিজ আদর্শ থেকে বিচ্যুত
হননি। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে (পৃ. ২১) বঙ্গবন্ধু লিখেছেনÑবঙ্গবন্ধুর প্রতি
তাঁর বাবার নির্দেশ ছিল, ‘sincerity of purpose and honesty of purpose’
পিতার এই আদর্শিক নির্দেশনা বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে অনুসরণ
করেছিলেন তা স্পষ্ট। বস্তুত বঙ্গবন্ধু বাঙালিত্বকে, বাঙালির মহান অতীত,
বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে ধারণ করতেন তাঁর মননে ও চিন্তায়।
লেখক পরিচিতিঃ
এই ধরনের অন্যান্য বই দেখুন “প্রি-অর্ডারের বই” এবং আমাদের নতুন সব আপডেট পেতে তাম্রলিপি ফেসবুক পেজে ফলো করতে পারেন।